করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে রোববার সকাল থেকে শুরু হওয়া লকডাউনে পুলিশ কঠোর অবস্থানে আছে।
সকাল থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ তল্লাশির পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধিতে মাইকিং করে। প্রয়োজন ছাড়া লোকজন রাস্তায় নামলে পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে। প্রয়োজনীয় নথি কাগজ ছাড়া কাউকে ছাড় দিচ্ছে না পুলিশ। কেবলমাত্র জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত গাড়িগুলোকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ঝড়ের গতি, রাজ্যের চিকিৎসা পরিকাঠামোকে স্যাচুরেশন পয়েন্টে পৌঁছে দিয়েছে। হাসপাতালে শয্যা ও অক্সিজেনের তীব্র সংকট। রয়েছে টিকার আকাল। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য সরকার প্রশাসনিক স্তরে নানা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা সত্তেও করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের গ্রাফ রাজ্য সরকারকে রোববার থেকে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। আর তা কড়াভাবে পালনের জন্য রাজ্যজুড়ে পুলিশি নজরদারি চোখে পড়ার মতো ।
রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার লকডাউন ঘোষণা করে বলেন, ‘করোনাবিধি অমান্য করলে মহামারি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পশ্চিমবঙ্গে কার্যত লকডাউনের কারণে বন্ধের চেহারা নিলেও, বিভিন্ন বাজারে করোনাবিধি উপেক্ষা করে মানুষকে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। খিদিরপুর, নিউটাউন, সোনারপুর, বারুইপুরের মতো বাজারে সময় উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও মুদির দোকান, সবজির দোকানে ছিল ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। মাস্ক পরা কিংবা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কোনো বালাই নেই। অবশ্য পরে পুলিশ এসে বাজার বন্ধ করে দিয়েছে।
বিমানবন্দরে প্রবেশ ও বের হওয়ার ক্ষেত্রেও কড়া নজরদারি চালাচ্ছে বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ।
এদিকে লকডাউনের কারণে দূরপাল্লার ট্রেনে হাওড়ায় ফিরে সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা। পরে তাদের বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পুলিশের উদ্যোগে বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করা হয়।
খড়গপুর স্টেশনে ও দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছাতে সমস্যায় পড়েন। জিআরপি, সিভিক ভলেন্টিয়ারদের টাকার জুলুমের অভিযোগ করেছেন ওই যাত্রীরা ।
লকডাউনের প্রথম দিনে পুলিশের কড়া বিধিনিষেধ ভাঙতে অনেকেই জরুরি পরিষেবায় যুক্ত বলে ভুয়া স্টিকার লাগিয়েছে বলে পুলিশের অভিযোগ ।
বিনা কারণে রাস্তায় নামলে দেগঙ্গা থেকে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুর দাঁতন এলাকায় জামাকাপড়ের দোকান খোলায় দুই ব্যবসায়ীকে আটক করে পুলিশ ।
রাজ্যে ১৫ দিনের লকডাউনে করোনাবিধি পালনে প্রথম দিন থেকে প্রশাসনিক তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। কড়া পুলিশি নজরদারিতে লকডাউন চলছে রাজ্যে। উদ্দেশ্য একটাই করোনা শৃঙ্খলা ভেঙে দেয়া।